ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২
নভেম্বরের মধ্যে ৫ ব্যাংক একীভূত করার পরিকল্পনা বাংলাদেশ ব্যাংকের

হাসান মাহমুদ ফারাবী
রিপোর্টার

হাসান মাহমুদ ফারাবী: বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি ঋণগ্রস্ত ব্যাংককে একীভূত করার প্রক্রিয়া দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে এবং এই বছরের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তা সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংককে একীভূত করে একটি একক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান গঠনের খসড়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, এই একীভূতকরণের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
নতুন এই প্রতিষ্ঠানটি একটি শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক হিসেবে কাজ করবে। এর মোট প্রাথমিক মূলধন ৩৫ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে, যার মধ্যে সরকার জাতীয় বাজেট থেকে নতুন মূলধন হিসেবে ২০ হাজার কোটি টাকা যোগান দেবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন বলেছেন, "ব্যাংক একীভূতকরণের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিটি কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। মূল চ্যালেঞ্জ ছিল প্রয়োজনীয় মূলধন নিশ্চিত করা। যেহেতু নতুন ব্যাংকটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন হবে এবং এর অর্থায়ন অনুমোদিত হয়েছে, আমরা আশা করি নভেম্বরের মধ্যে একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শেষ হবে।"
এই প্রক্রিয়া দ্রুত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডেপুটি গভর্নর কবির আহমেদের নেতৃত্বে একটি কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করেছে। এই প্যানেলের প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে আমানতকারীদের তহবিলের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। আরিফ হোসেন বলেন, "একীভূতকরণ সম্পন্ন হলে ছোট আমানতকারীরা চাইলে প্রথমে তাদের টাকা তুলতে পারবেন। বড় আমানতকারীদেরও ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ সরকার তাদের তহবিলের দায়িত্ব নিচ্ছে।"
একীভূতকরণের পর পাঁচটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ অবিলম্বে ভেঙে দেওয়া হবে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নতুন পর্ষদ গঠন করবে এবং একটি চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে ব্যাংকটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচটি ব্যাংকের সম্মিলিত খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা, যা তাদের মোট বকেয়া ঋণের প্রায় ৭৭ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক যার ৯৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি, এরপর ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৯৬ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৯৫ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৬২ শতাংশ এবং এক্সিম ব্যাংকের ৪৮ শতাংশ ঋণ খেলাপি।
কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, এই একীভূতকরণের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মামলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আত্মবিশ্বাসী যে এই প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে না। একজন কর্মকর্তা বলেন, “গভর্নর স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে যদি কোনো মামলা হয়, তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে মোকাবিলা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক যেকোনো ধরনের আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।"
তবে এই পাঁচটি ব্যাংকের কর্মীদের ভবিষ্যৎ এবং তাদের শাখাগুলোর যৌক্তিকীকরণ নিয়ে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে দ্রুত মুনাফা তোলার ৫টি ট্রেডিং টিপস
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- রবির মাধ্যমে দেশে আসছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- চার জেডের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ আস্থা
- পাঁচ কোম্পানির কারণে থমকে গেল শেয়ারবাজারের উত্থান