ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ধাক্কায় ভারতের শেয়ারবাজারে আতঙ্ক

ভারতের শেয়ারবাজার বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকেই বড় ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় পণ্যের ওপর নতুন করে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, ফলে মোট শুল্কের হার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। এই শুল্ক ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনার ‘সাজা’ হিসেবে আরোপ করা হয়েছে।
দিনের শুরুতেই বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের সেনসেক্স সূচক ৫০৮ পয়েন্ট কমে ৮০ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে নেমে আসে। ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের নিফটি সূচকও ১৫৭ পয়েন্ট পতিত হয়ে ২৪ হাজার ৫৫৪-এ দাঁড়িয়েছে।
বাজারে পতনের মধ্যেই হেভিওয়েট কোম্পানিগুলোর শেয়ার সবচেয়ে বেশি চাপের মুখে পড়ে। এই তালিকায় রয়েছে—এইচসিএল টেক, এইচডিএফসি ব্যাংক, পাওয়ার গ্রিড, সান ফার্মা, এনটিপিসি ও ভারত ইলেকট্রনিকস। অন্যদিকে কিছু কোম্পানির শেয়ারে সীমিত উর্ধ্বমুখী প্রভাব দেখা গেছে, যেমন—এটার্নাল, এশিয়ান পেইন্টস, টাইটান, মারুতি এবং লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, উচ্চ শুল্কের কারণে ভারতের রপ্তানি খাতের ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। বিশেষ করে টেক্সটাইল, গয়না, চামড়াজাত পণ্য, কৃষিজাত এবং যন্ত্রাংশ রপ্তানি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, এই খাতগুলো মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে প্রায় ৩৭ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
দীর্ঘমেয়াদে এই পরিস্থিতি ব্যবসায়িক আস্থা ও চাকরির বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। তবে ভারত সরকার বিষয়টিকে সাময়িক সমস্যা হিসেবে দেখছে। দিল্লি জানিয়েছে, শুল্ক সংক্রান্ত জটিলতা অস্থায়ী এবং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান হবে। পাশাপাশি রপ্তানিকারকদের জন্য আর্থিক সহায়তা এবং বিকল্প বাজার খোঁজার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছে। গত মঙ্গলবার বিদেশি বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৬ হাজার ৫১৬ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন। তবে দেশীয় প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা প্রায় ৭ হাজার ৬০ কোটি টাকার শেয়ার কিনে বাজারে ভারসাম্য রক্ষা করেছেন। এই কারণে সামগ্রিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও মূল প্রবণতা নেতিবাচক।
বিশ্লেষকেরা আরও বলছেন, উচ্চ শুল্কের ধাক্কার চেয়ে বড় উদ্বেগ বাজারের অতিমূল্যায়ন এবং কোম্পানিগুলোর দুর্বল আয় বৃদ্ধির হার। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক চাপের সঙ্গে এই সমস্যাগুলো যুক্ত হওয়ায়, আগামী কয়েক সপ্তাহে ভারতীয় শেয়ারবাজারে অস্থিরতা চলতে পারে। তবে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের ক্রয় আগ্রহই বাজারকে টিকিয়ে রাখার প্রধান শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ