ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

শেয়ারবাজারের তিন ব্যাংকের সম্পদ যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক

২০২৫ আগস্ট ২১ ০৭:১১:২২

শেয়ারবাজারের তিন ব্যাংকের সম্পদ যাচাইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের আর্থিক খাতে অস্থিরতা কাটাতে তিন ব্যাংকের 'অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ (AQR)' বা সম্পদের গুণগত মান যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে। ব্যাংকগুলো হলো আইএফআইসি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং এবি ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, সমস্যাগ্রস্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ফরেনসিক অডিটের চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২০ আগস্ট) গ্লোবাল অডিটিং ফার্ম ডেলয়েট বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করার মাধ্যমে এই পর্যালোচনা শুরু করেছে। এই পর্যালোচনা শেষে ব্যাংকগুলোর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা হবে - যেমন, এগুলো একীভূত, অধিগ্রহণ, বিলুপ্ত, নাকি নতুন করে মূলধন যোগানের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হবে।

এর আগে, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং এবং কেপিএমজি ছয়টি ব্যাংকের এ ধরনের পর্যালোচনা সম্পন্ন করে। সেই পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ আগে যা দেখানো হয়েছিল, তার চেয়ে চার গুণ বেশি।

উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে দ্বিতীয় ধাপে আরও ১১টি ব্যাংকের AQR করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, মেঘনা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনআরবি, এনআরবিসি, প্রিমিয়ার ব্যাংক এবং ইউসিবি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই পর্যালোচনার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর প্রকৃত খেলাপি ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি, মূলধন ঘাটতি এবং আমানত ও ঋণের সামগ্রিক অবস্থা পরিষ্কারভাবে জানা যাবে। এটি ব্যাংক একীভূত করার জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনের পরিমাণও নির্ধারণ করতে সহায়তা করবে।

বর্তমানে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককে তার বিদেশি মালিকানার কারণে একীভূতকরণের প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, বাকি পাঁচটি শরিয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংককে একটি নতুন সত্তায় একীভূত করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার জন্য ৩৫,০০০ কোটি টাকার একটি প্রাথমিক পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার কোটি টাকা সরকারের কাছে বিনিয়োগ হিসেবে চাওয়া হবে। এছাড়াও, এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিশ্বব্যাংকের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তা নেওয়ার পাশাপাশি 'ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ফান্ড' থেকে ঋণ নেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রস্তাবিত পরিকল্পনার বিষয়ে সরকারের সম্মতি চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক শিগগিরই একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠাবে।

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত