ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২
পালানোর আগে হাসিনার কাছে তাপসের আবদার, ফোনালাপ ফাঁস

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে টিকতে না পেরে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের পতনের ইঙ্গিত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতাকর্মী দেশত্যাগ করেন বলে জানা যায়।
এদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সরকার পতনের মাত্র দুই দিন আগেই তিনি বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে তাপসের একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড। ফোনালাপটি প্রথম প্রকাশ করেন প্রবাসী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের। এরপর থেকেই ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
রেকর্ডটি দুটি অংশে বিভক্ত। সায়েরের দাবি এবং অডিওর দ্বিতীয় অংশের ভাষ্য অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের উত্তাল সময়ে গতবছর ৩ আগস্ট সিঙ্গাপুর যেতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন তাপস। কিন্তু তাকে ইমিগ্রেশন আটকে দিয়েছিল। তখন ফুপু প্রধানমন্ত্রীকে কল দিয়ে অফিসারকে তাকে ছেড়ে দিতে বলার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
আর প্রথম অংশের অডিওতে ২২ জুলাই বেলা ১১.৪৯ মিনিটের বলে দাবি করেছেন সায়ের। যেখানে তাপস মিষ্টি ভাষায় ফুপুকে দেখতে আসার আবদার করছেন। কিন্তু উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাকে আসতে বারণ করেন হাসিনা।
সোমবার রাতে এক ফেসবুকে রেকর্ডটি ছাড়েন সায়ের। ফোনালাপটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
প্রথম অংশ ২২শে জুলাই বেলা ১১.৪৯ মিনিটের বলে দাবি করেছেন সায়ের। যেখানে তাপস মিষ্টি ভাষায় আবদার করছে ‘হাসুমনি, একটু আসতে চাচ্ছিলাম, তোমাকে দেখতে চাচ্ছিলাম, আসব?’ জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসবের মধ্যে আসার দরকার নেই।’ তখন তাপস বলেন, ‘তাহলে (কারফিউ) শিথিল হওয়ার পর আসি?’ হাসিনা বলেন, ‘আমি তখন অফিসে থাকব। ব্যবসায়ীদের ডাকছি তো। ২-৩টার সময়।’ তাপস বলেন, ‘আচ্ছা, তাহলে ওই সময় অফিসে এসে দেখা করে যাব।’
দ্বিতীয় অংশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন তারা। দ্বিতীয়টি ৩রা আগস্ট ২০২৪ সকাল ৮.১৬ মিনিটের বলে দাবি সায়েরের।
এই পর্বে ফোন করে তাপস কুশল বিনিময়ের পর বলেন, ‘আমি একটু সিংগাপুর যেতে চাচ্ছিলাম, যাব?’ হাসিনা তাকে যেতেও বলেন। কিন্তু সম্ভবত তিনি জানতেন না তাপস দেশ ছাড়ার সকল প্রস্তুতি নিয়ে এয়ারপোর্টে পৌঁছে তাকে ফোন করেছেন। কেননা শেখ হাসিনা তাকে বলেছিলেন, ‘তিনি মিছিল করতে মানা করেছেন, প্রত্যেকটা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সবাই জমা থাকবে।’ এর উত্তরে তাপস বলেন, ‘আমি এয়ারপোর্টে চলে আসছি। জিও-টা (বিদেশ যাত্রায় প্রয়োজনীয় গভর্নমেন্ট অর্ডার) এখনো হয়নাই বলে এখানে ইয়ে করছে না।’ তখন হাসিনা তাপসকে প্রশ্ন করেন, ‘জিওটা সঙ্গে নিলে না কেন?’ তাপস উত্তরে বলেন, ‘অ্যাপ্লাই করে দিছি কিন্তু হতে হতে তো ১১টা-১২টা বাজতে পারে, মানে তোমার ওখানে যেতে। তো আমি ইমিগ্রেশনে আসছি, কাউকে ইমিগ্রেশনে বলে দেওয়া যাবে কি? আমার ফ্লাইট এখনি ছেড়ে দেবে।
জবাবে হাসিনা বলেন, হ্যাঁ, বলা যাবে। ফাইল পাঠাইছো তো? তখন তাপস বলেন, হ্যাঁ, ফাইল প্রমিত মহদোয় পাঠাচ্ছেন। হাসিনা বলেন, ‘আচ্ছা, দিয়ে দাও।’ তখন তাপস হাসিনাকে একজন ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সাথে সরাসরি কথা বলতে অনুরোধ করে বলেন, এই যে এখানে অফিসার আছেন, ইমিগ্রেশন অফিসার। তখন হাসিনা তাপসের কাছে জানতে চান, কাউকে বলিয়ে দিতে হবে কি না? তাপস বলেন, হ্যাঁ, আমি দিব ফোনটা? হাসিনা বলেন, ‘না না, আমি তার সাথে কথা বলব কেন। আমি অফিসের কর্মকর্তার মাধ্যমে বলিয়ে দিতে পারি।‘ তাপস জানতে চান, কাকে বলব তাহলে? হাসিনা বলেন, ‘আমার সেক্রেটারিকে বললেই হবে, শাহ সালাউদ্দিন।‘ তাপস পুনরায় নিশ্চিত হতে জিজ্ঞেস করেন, সালাউদ্দিন সাহেব? শেখ হাসিনা বলেন , হ্যাঁ।
চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে শেখ ফজলে নূর তাপস ও তার স্ত্রী আফরিন তাপসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্র ও বহুজাতিক ১৫ কোম্পানি
- ভারতে ঢাবির দুই ছাত্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, ক্ষোভ
- ১১'শ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিবে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন
- ডিএনসিসির শিক্ষাবৃত্তি পাবে ২ হাজার শিক্ষার্থী
- স্কয়ার ফার্মার বাজার মূলধনে নতুন মাইলফলক
- শেয়ারবাজারে বড়দের দাপট, ছোটদের পিছুটান
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৭ প্রতিষ্ঠান
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৪ প্রতিষ্ঠান
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- বিকালে আসছে ১০ কোম্পানির ইপিএস
- বিকালে আসছে ২১ কোম্পানির ইপিএস
- ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- নতুন সিনেট সদস্য হলেন ঢাবির ৫ অধ্যাপক
- শিবলী রুবাইয়াত ও শেখ শামসুদ্দিন শেয়ারবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ১২ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস