শেয়ারবাজারে নজরদারি জোরদারে বিএসইসি-অস্ট্রেলিয়া এক্সচেঞ্জের আলোচনা

শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাদের নজরদারি ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এই লক্ষ্যে তারা অস্ট্রেলিয়ান সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশনের (এএসআইসি) সাথে একটি ফলপ্রসূ আলোচনা করেছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বুধবার (১৮ জুন) সিডনিতে এএসআইসি'র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে এই বৈঠক করেন।

বৈঠকে দুই দেশের কমিশনের মধ্যে সম্ভাব্য প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়, যা বিএসইসি'র নজরদারি ব্যবস্থাকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে সহায়ক হবে। বিএসইসি'র জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সহকারী মুখপাত্র মো. মোহাইমিনুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে আশা প্রকাশ করা হয়, এই সহযোগিতা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বৈঠকে বিএসইসি'র নজরদারি ব্যবস্থা আপগ্রেড করার জন্য এএসআইসি এবং বিএসইসি'র মধ্যে সম্ভাব্য প্রযুক্তিগত সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বিশেষ করে, রিয়েল-টাইম মেকানিজম প্রবর্তন এবং অনিয়ম সনাক্ত করতে উন্নত ডেটা অ্যানালিটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং মেশিন লার্নিং (এমএল)-এর ওপর ভিত্তি করে উন্নত বাজার পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়।

এছাড়াও, ঝুঁকি বিশ্লেষণ এবং ডেটা-চালিত সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সহজ করতে এক্সবিআরএল (XBRL) প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে সুপারটেক (SupTech) এবং রিগটেক (RegTech) সল্যুশন (তত্ত্বাবধান প্রযুক্তি এবং নিয়ন্ত্রক প্রযুক্তি) বাস্তবায়নের বিষয়ও সভায় গুরুত্ব পায়।

ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিএসইসি'র শাসনব্যবস্থা পর্যালোচনা করার জন্য এএসআইসি'র সহায়তা চান। বিশেষ করে, অতীতে শাসনব্যবস্থার যে ত্রুটিগুলো, যেমন: অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য, তথ্য ফাঁস এবং বাজার ম্যানিপুলেশনের সুযোগ করে দিয়েছে এমন ঘাটতি ও ফাঁকগুলো সনাক্ত করার জন্য এই সহায়তা চাওয়া হয়। প্রাতিষ্ঠানিক শাসনব্যবস্থা, পরিচালনা দক্ষতা এবং নিয়ন্ত্রক দূরদর্শিতা উন্নত করার জন্য কাঠামোগত সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি সহ বিএসইসি'র জন্য একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক মডেল তৈরির জন্য সহায়তা চাওয়া হয়।

এএসআইসি'র কর্মকর্তারা বিএসইসিকে সমর্থনে তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উভয় দল যৌথভাবে সহযোগিতার জন্য একটি কাঠামো তৈরি করতে সম্মত হয়েছে এবং যত দ্রুত সম্ভব নিজ নিজ ফোকাল ব্যক্তিদের মনোনীত করবে।

এএসআইসি'র পক্ষে ইন্টারন্যাশনাল সিনিয়র এক্সিকিউটিভ জেরার্ড ফিটজপ্যাট্রিক, মার্কেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ লিডার বেন কোন-উরবাখ, অ্যালিসা ফ্রেডেরিক, বেলিন্ডা স্যান্ডোনাটো সভায় উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে, ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে সিডনিতে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মো. শাখাওয়াত হোসেন, বাংলাদেশ হাই কমিশনের (ক্যানবেরা) বাণিজ্যিক কাউন্সিলর রনি চাকমা, সাবেক ডিএসই এমডি তারিক ভূঁইয়া এবং অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল-এর চেয়ার ফয়েজ দেওয়ান উপস্থিত ছিলেন।