ঢাকা, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

চেনাব নদীর বাঁধ খুলে দিল ভারত, বন্যার শঙ্কা

২০২৫ মে ১২ ১৪:৩০:২৯
চেনাব নদীর বাঁধ খুলে দিল ভারত, বন্যার শঙ্কা

ডুয়া ডেস্ক: পূর্ব কোনো সতর্কতা না দিয়েই চেনাব নদীর বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত। এর ফলে প্রবল পানির স্রোত পাকিস্তানের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে পাকিস্তান অংশে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় এখন হঠাৎ পানির এই ঢলে নদীতীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ভারতের রামবান জেলার বাগলিহার জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের গেটগুলো একাধিকবার খুলেছে দেশটি। শনিবার দুইটি গেট খোলার পর রোববার (১১ মে) আরও একটি গেট খুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গেটগুলো খোলা রাখা হয়েছিল বলে জানায় দ্য ইকোনমিক টাইমস।

ভারী বৃষ্টির কারণে ভারতের ওই অঞ্চলে পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই গেট খুলে দিতে হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ভারত সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি।

১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী, চেনাবসহ পশ্চিমের তিনটি নদীর (ইন্দাস, ঝেলাম, চেনাব) পানির অধিকারের মালিক পাকিস্তান। ভারত এই নদীগুলোর পানি সীমিত ব্যবহারের অনুমতি পেলেও পানি সংরক্ষণ বা প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করার অধিকার নেই।

তবে কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে ভারত চুক্তিটি কার্যত স্থগিত করে রেখেছে এবং চেনাব ও ঝেলাম নদীর পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় রাজনীতিবিদদের কেউ কেউ তো সিন্ধুর পানিপ্রবাহ পুরোপুরি বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন।

এর ফলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে এবং একপর্যায়ে তা সামরিক সংঘর্ষেও রূপ নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হলেও ভারত চুক্তি স্থগিতের অবস্থান বজায় রেখেছে।

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, চুক্তি কার্যকর না থাকায় ভারত চেনাব নদীর পানি ইচ্ছেমতো নিয়ন্ত্রণ করছে—প্রয়োজনে আটকে রাখছে, আবার অতিরিক্ত প্রবাহ সামলাতে গেট খুলে দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। বাগলিহার বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশেই।

একই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে ঝেলাম নদীতেও। অতিবৃষ্টির কারণে বাঁধের গেট বন্ধ রাখা সম্ভব না হওয়ায় ভারত নিয়মিত গেট খোলার ও বন্ধ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

এই অনিয়মিত পানিপ্রবাহ পাকিস্তানের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটির কৃষি ও সেচব্যবস্থা মূলত পশ্চিমের নদীগুলোর পানির ওপর নির্ভরশীল। পানিপ্রবাহে সামান্য পরিবর্তনও ফসল উৎপাদনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ জলবিদ্যুৎ থেকে আসে, যা এই পানি সংকটে ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে