ঢাকা, রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা যেভাবে পালালেন, তালিকা প্রকাশ

২০২৫ মে ১১ ০৯:৫৬:৫৫
শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠরা যেভাবে পালালেন, তালিকা প্রকাশ

ডুয়া ডেস্ক: ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আলোচিত 'জুলাই বিপ্লব'-এর পর আওয়ামী লীগ সরকারের বহু শীর্ষস্থানীয় নেতা, মন্ত্রী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ভারতের দিল্লি ও কলকাতা হয়ে উঠেছে তাদের অন্যতম বড় আশ্রয়স্থল। পাশাপাশি দুবাই, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কম্বোডিয়া ও বেলজিয়ামসহ আরও কয়েকটি দেশে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে।

বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, অনেকেই জুলাইয়ের শেষ দিকেই নিরাপত্তার আশঙ্কায় দেশ ছাড়েন আর বাকিরা বিপ্লবের পরপরই গোপনে দেশত্যাগ করেন। এসব পালিয়ে যাওয়া নেতাদের মধ্যে আছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, যিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে থাইল্যান্ডে গেলেও পরে ভারতের দিল্লিতে আশ্রয় নেন।

গণঅভ্যুত্থানের দিন সাবেক স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী সংসদ ভবনের বাংকারে আশ্রয় নেন এবং পরে সেনাবাহিনী তাকে উদ্ধার করে ঢাকার সেনানিবাসে নেয়। তিনি এখনও সেখানে অবস্থান করছেন।

প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদ গুরুতর অসুস্থ থাকায় তাকে এ আলোচনার বাইরে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে অন্তত ১২ জন সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য বর্তমানে কারাবন্দি, যাদের মধ্যে রয়েছেন আমির হোসেন আমু, সালমান এফ রহমান, ডা. দীপু মনি, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, জুনাইদ আহমেদ পলক ও সাবেক সেনা-পুলিশ কর্মকর্তারা।

আইএসপিআরের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে ৬২৬ জন রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়, যাদের মধ্যে ৬১৫ জন পরে স্বেচ্ছায় চলে যান।

বেশিরভাগ নেতা যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত প্রবেশ করেন। এছাড়া সিলেট, চট্টগ্রাম, আখাউড়া, ফেনী ও সাতক্ষীরার সীমান্ত ব্যবহার করেন অনেকে। প্রায় ২০০ জনের বেশি আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন শহরে অবস্থান করছেন।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, নওফেল, মায়া, বাহাউদ্দিন নাছিম এবং গোয়েন্দা প্রধান মনিরুল ইসলামসহ অনেকেই ভারতে অবস্থান করছেন।

নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিক সাগরপথে টেকনাফ হয়ে ভারতে গিয়ে পরে লন্ডনে চলে যান। শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা সরাসরি যাননি, তবে তাদের স্ত্রীদের গোপনে বিদেশ পাঠানো হয়, যা পূর্ব পরিকল্পিত তৎপরতার ইঙ্গিত দেয়।

হাছান মাহমুদ ও প্রতিমন্ত্রী এ আরাফাত চট্টগ্রাম থেকে একটি চার্টার্ড বিমানে পালিয়ে সিঙ্গাপুর, বেলজিয়াম হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান। তাদের সঙ্গে যোগ দেন খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, শফিকুর রহমান চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম ও বিপ্লব বড়ুয়া।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বর্তমানে কম্বোডিয়ায় বসবাস করছেন, সেখানে গাড়ি ও সম্পত্তি কিনেছেন। শেখ ফজলে নূর তাপস এখন লন্ডনে, তার ভাই শেখ পরশ কানাডায় রয়েছেন। শেখ হেলাল, সালাহ উদ্দিন ও তন্ময় দিল্লিতে অবস্থান করছেন।

শামীম ওসমান থাইল্যান্ড ও দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। মুস্তফা কামাল দুবাইয়ে, বাহাউদ্দিন নাছিম মেঘালয় হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের একসময় বলেছিলেন তিনি পালাবেন না, তবে সূত্র মতে, পরে তিনিও কলকাতায় আশ্রয় নেন।

সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ মালয়েশিয়ায় অবস্থান করার পর বর্তমানে দুবাই হয়ে স্পেনে রয়েছেন। ডিবির সাবেক কর্মকর্তা হারুন নেপাল হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন।

সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিব ময়মনসিংহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়ে বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সঙ্গে শেখ হাসিনার পক্ষে যোগাযোগ রাখছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ইস্তান্বুলে, শেখ হাসিনার আত্মীয় নিক্সন চৌধুরী কলকাতায় এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল ইসলাম মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে