ঢাকা, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

কয়েক দিনেই দুই দেশের ব্যয় ৫০০ বিলিয়ন ডলার!

২০২৫ মে ১০ ২২:৪৮:৩০
কয়েক দিনেই দুই দেশের ব্যয় ৫০০ বিলিয়ন ডলার!

ডুয়া ডেস্ক: গত চার সপ্তাহ ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘাত চলছে। এই চার সপ্তাহে সামরিক ব্যয়ের পাশাপাশি দুই দেশের অর্থনীতির নানা খাতে মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চলমান ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা দুই দেশকেই মারাত্মক অর্থনৈতিক চাপে ফেলেছে। চার সপ্তাহের এই সামরিক উত্তেজনায় শুধু প্রতিরক্ষা ব্যয় নয়, অর্থনীতির বিভিন্ন খাতেও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রতিদিন প্রায় ১০০টি যুদ্ধবিমান মোতায়েন করছে, যার মধ্যে রয়েছে রাফাল, মিরাজ ২০০০, সুখোই এবং তেজস। প্রতিটি বিমানের উড্ডয়ন ব্যয় আনুমানিক ৮০ হাজার ডলার। পাশাপাশি প্রতিদিন ব্যবহৃত হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০টি নির্ভুলভাবে নির্দেশিত বোমা, প্রতিটির মূল্য ১ লাখ থেকে ১১ লাখ ডলারের মধ্যে। কেবল বিমান অভিযানের খরচ হিসেবেই চার সপ্তাহে ব্যয় হতে পারে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার।

ভারত প্রতিদিন প্রায় ৩০টি ড্রোন ও আইএআই লোইটারিং মিউনিশন মোতায়েন করছে। হেরন, সার্চার ও হ্যারোপের মতো ড্রোন ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে নজরদারি, যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ কার্যক্রম। ড্রোন ধ্বংস ও প্রতিস্থাপন, স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইথ, নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং জ্যামিং প্রযুক্তি পরিচালনার জন্য প্রতিদিন প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে, যা চার সপ্তাহে পৌঁছাতে পারে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে।

এছাড়া, প্রতিদিন ভারত থেকে ছোড়া হচ্ছে ১০টি ব্রাহ্মোস এবং ১০ থেকে ২০টি প্রলয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এতে দৈনিক ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার, যার ফলে চার সপ্তাহে এই খরচের পরিমাণ হতে পারে প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন ডলার।

সেনা মোতায়েন, জ্বালানি ব্যয়, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখা এবং নৌবাহিনীর প্রস্তুতি বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন গড়ে ভারতের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১১০ মিলিয়ন ডলার। এ খাতে চার সপ্তাহে মোট ব্যয় দাঁড়াতে পারে প্রায় ৫.৪ বিলিয়ন ডলার।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সামরিক ব্যয়ও ব্যাপক হারে বেড়েছে। প্রতিদিন বিমান হামলা ও টহল পরিচালনায় খরচ হচ্ছে ২৫ মিলিয়ন ডলারের বেশি, যার ফলে চার সপ্তাহে ব্যয় দাঁড়াতে পারে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অতিরিক্ত ব্যয় হিসেবে আরও প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ডলার যুক্ত হচ্ছে।

পাকিস্তান সীমান্তে সতর্কাবস্থা বজায় রাখা, সেনা মোতায়েন ও চলাচল, রাডার কার্যক্রম, এসএএম (সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল) ব্যবস্থার মোতায়েন এবং গোয়েন্দা তৎপরতা চালাতে প্রতিদিন আনুমানিক ১৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। এই ব্যয় চার সপ্তাহে দাঁড়াতে পারে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ডলার।

সরাসরি সামরিক খরচের বাইরে ভারত ও পাকিস্তান—দুই দেশেই যুদ্ধাবস্থার কারণে অর্থনীতিতে পড়ছে গভীর প্রভাব। ভারতের ক্ষেত্রে জিডিপিতে সম্ভাব্য ক্ষতি ধরা হচ্ছে প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার। মুদ্রাবাজার ও শেয়ারবাজারে অস্থিরতার কারণে ক্ষতি হতে পারে ৯০ বিলিয়ন ডলার, বাণিজ্য ও সরবরাহব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে প্রায় ৮০ বিলিয়ন ডলার, এবং বিদেশি বিনিয়োগ কমে যেতে পারে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।

পাকিস্তানের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ভারতের তুলনায় কিছুটা কম হলেও তা মোটেও নগণ্য নয়। সম্ভাব্য জিডিপি ক্ষতি হতে পারে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার। বাজার অস্থিরতা ও মুদ্রার দরপতনের কারণে ক্ষতি দাঁড়াতে পারে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার, বাণিজ্য ও সরবরাহব্যবস্থায় ক্ষতি হতে পারে আরও ১২ বিলিয়ন ডলার, এবং বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস ও আইএমএফ সহায়তা কমে যাওয়ায় প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

সব মিলিয়ে, চার সপ্তাহের এই সামরিক উত্তেজনা ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের সম্মিলিত ব্যয় ৫০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে