ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২

অন্তর্বর্তী সরকারের গোপন সত্য ফাঁস!

২০২৫ মে ০৯ ১১:৫৬:৩৮
অন্তর্বর্তী সরকারের গোপন সত্য ফাঁস!

ডুয়া ডেস্ক: আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে টানা দুই মেয়াদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকারী আবদুল হামিদের দেশত্যাগের খবরে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন বিতর্ক দানা বাঁধছে—বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাদের জামিন পাওয়া, নির্বিঘ্নে দেশত্যাগ, এমনকি রাজনীতিতে পুনঃপ্রবেশের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে। অনেকেই মনে করছেন, এসবের পেছনে উপদেষ্টাদের—বিশেষ করে ছাত্র উপদেষ্টাদের—গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত না হওয়া এবং দলটিকে নিষিদ্ধ করার মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণ নিয়েও ছাত্র উপদেষ্টাদের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ছাত্র প্রতিনিধিদের একজন হিসেবে সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এক ফেসবুক পোস্টে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া ওই পোস্টে মাহফুজ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষায় জানান, তিনি একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন। তবে দলটির নাম উল্লেখ না করেই বলেন, “সবার আগে উনাদের সাথেই পরামর্শ করেছি। ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব।” তিনি আক্ষেপ করে আরও যোগ করেন, “সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে!”

তথ্য উপদেষ্টার ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য-

একটি দলের এক্টিভিস্টরা বারবার লীগ নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ছাত্ররা রাজি ছিল না, এটা বলে বেড়াচ্ছেন। মিথ্যা কথা। ক্যাবিনেটে প্রথম মিটিং ছিল আমার। আমি স্পষ্টভাবে এ আইনের অনেকগুলো ধারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। নাহিদ-আসিফও আমার পক্ষে ছিল স্বভাবতই। দল হিসাবে বিচারের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হলে একজন উপদেষ্টার জবাব ছিল ন্যুরেমবার্গ ট্রায়ালের মত পশ্চাৎপদ উদাহরণ আমরা আমলে নিতে পারি কিনা। এ যুক্তি যিনি দিয়েছিলেন, একটি দলের এক্টিভিস্টরা আজ সমানে তার পক্ষে স্ট্যাটাস দিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রদের কুপোকাত করতে। অথচ, উনার সাথে আমাদের কোন বিরোধ নেই। মিছে বিরোধ লাগানোর অপচেষ্টা করে কোন লাভ নেই।

বলে রাখা ভালো, দুজন আইন ব্যাকগ্রাউন্ডের উপদেষ্টা ( একজন ইতোমধ্যে মারা গিয়েছেন) ও আমাদের বক্তব্যের পক্ষে ছিলেন। সংস্কৃতি উপদেষ্টাও পক্ষে ছিলেন। গতকাল বিকালে কথা হয়েছে। দল হিসাবে লীগের বিচারের প্রভিশন অচিরেই যুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন উক্ত উপদেষ্টা। উনাকে ধন্যবাদ।

মিথ্যা বলা বন্ধ করুন। ঘোষণাপত্র নিয়ে আপনাদের দুই মাস টালবাহানা নিয়ে আমরা বলব। ছাত্রদের দল ঘোষণার প্রাক্কালে আপনারা দলীয় বয়ানের একটি ঘোষণাপত্র নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলেন। সমস্যা নেই, আমরাও চাই সবাই স্বীকৃত হোক। কিন্তু, এখন সেটাও হতে দিবেন না। দোষ আমাদেরও কম না। আমরা আপনাদের দলীয় প্রধানের আশ্বাসে আস্থা রেখেছিলাম।

পুনশ্চ: আমরা নির্বাচন পেছাতে চাইনা। ডিসেম্বর টু জুনের মধ্যে নির্বাচন হবেই।

আপনারা যদি মনে করেন, ছাত্ররা নিজেদের আদর্শ ও পরিকল্পনা নিতে পারেনা বরং এখান থেকে ওখান থেকে অহি আসলে আমরা কিছু করি, তাহলে আপনারা হয় ছাত্রদের খাটো করে দেখছেন, নয়তো ছাত্রদের ডিলেজিটিমাইজ করার পরিকল্পনায় আছেন। সেই আগস্ট থেকেই আমরা জাতির জন্য যা ভালো মনে করেছি, সবার পরামর্শ নিয়েই করেছি। বরং, উক্ত দলকেই আমরা বেশি ভরসা করেছি। সবার আগে উনাদের সাথেই পরামর্শ করেছি। ভরসার বিনিময়ে পেয়েছি অশ্বডিম্ব। সব দোষ এখন ছাত্র উপদেষ্টা নন্দঘোষ!

আমরা উক্ত দলকে বিশ্বাস করতে চাই। উক্ত দলের প্রধানকে বিশ্বাস করতে চাই। উনি আমাদের বিশ্বাসের মূল্য দিয়ে লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ও ঘোষণাপত্র প্রকাশে দেশপ্রেমিক ও প্রাগমাটিক ভূমিকা রাখবেন বলেই আস্থা রাখি। উক্ত দলকে নিয়ে কে কি বলবে জানি না কিন্তু আমরা চাই উক্ত দল ছাত্রদের সাথে নিয়ে দেশের পক্ষে, অভ্যুত্থানের শত্রুদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ঐকমত্যের নেতৃত্ব দিক। দেশপ্রেমিক ও সার্বভৌমত্বের পক্ষের শক্তি হিসাবে নেতৃত্ব দিলে ছাত্ররা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় উনাদের সাথে চলবেন।

ঐক্যবদ্ধ হোন। নেতৃত্ব দিন। এ প্রজন্মকে হতাশ করবেন না। এ প্রজন্ম এ দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে