জাকসু নির্বাচন: কোন হলে কত ভোটার, কারা লড়ছেন কোন পদে?

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এবারের নির্বাচনে মোট ১১ হাজার ৮৯৭ জন শিক্ষার্থী তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন, যার মধ্যে ছাত্র ৬ হাজার ১১৫ জন এবং ছাত্রী ৫ হাজার ৭২৮ জন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৫টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মোট ১৭৭ জন প্রার্থী। বামপন্থি, শিবির, ছাত্রদল এবং স্বতন্ত্রদের সমর্থিত মোট আটটি প্যানেল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে।

শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে নিজ নিজ হলেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ছাত্রদের ১১টি এবং ছাত্রীদের ১০টি হল মিলিয়ে মোট ২১টি ভোটকেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে, যেখানে স্থাপন করা হয়েছে ২২৪টি বুথ।

ছাত্রদের হলের মধ্যে আল বেরুনী হলে ২১০ জন, আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ৩৩৩ জন, মীর মশাররফ হোসেন হলে ৪৬৪ জন, শহীদ সালাম-বরকত হলে ২৯৮ জন, মওলানা ভাসানী হলে ৫১৪ জন, ১০ নম্বর ছাত্র হলে ৫২২ জন, শহীদ রফিক-জব্বার হলে ৬৫০ জন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৩৫০ জন, ২১ নম্বর ছাত্র হলে ৭৩৫ জন, জাতীয় কবি নজরুল হলে ৯৯২ জন এবং তাজউদ্দীন আহমদ হলে ৯৪৭ জন ভোটার রয়েছেন।

ছাত্রীদের হলের মধ্যে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৭৯ জন, জাহানারা ইমাম হলে ৩৬৭ জন, প্রীতিলতা হলে ৩৯৬ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৪০৩ জন, সুফিয়া কামাল হলে ৪৫৬ জন, ১৩ নম্বর ছাত্রী হলে ৫১৯ জন, ১৫ নম্বর ছাত্রী হলে ৫৭১ জন, রোকেয়া হলে ৯৫৬ জন, ফজিলাতুন্নেছা হলে ৭৯৮ জন এবং তারামন বিবি হলে ৯৮৩ জন ভোটার রয়েছেন।

নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আটটি প্যানেল হলো:

‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ (বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ-বাগছাস সমর্থিত): ভিপি পদে আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল এবং জিএস পদে আবু তৌহিদ মো. সিয়াম লড়বেন। এতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে মালিহা নামলাহ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে জিয়া উদ্দিন আয়ান রয়েছেন।

‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ (ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত): ভিপি পদে আরিফুল্লাহ আদিব এবং জিএস পদে মাজহারুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ফেরদৌস আল হাসান ও নারী এজিএস পদে আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা।

ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল: ভিপি পদে মো. শেখ সাদী হাসান এবং জিএস পদে তানজিলা হোসাইন বৈশাখী (একমাত্র নারী জিএস প্রার্থী) লড়ছেন। এজিএস (পুরুষ) পদে মো. সাজ্জাদুল ইসলাম এবং এজিএস (নারী) পদে আঞ্জুমান আরা ইকরাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

বামপন্থিদের প্যানেলসমূহ:

‘সম্প্রীতির ঐক্য’ (ছাত্র ইউনিয়ন-অদ্রি-অর্ক একাংশ সমর্থিত): ভিপি প্রার্থী বাতিল হওয়ায় ভিপিহীন এই প্যানেলে জিএস পদে শরন এহসান রয়েছেন। এতে ১১ জন নারী প্রার্থীসহ আদিবাসী, সনাতন ধর্মাবলম্বী, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী প্রার্থীরাও রয়েছেন।

‘সংশপ্তক পর্ষদ’ (ছাত্র ইউনিয়ন-ইমন-তানজিম ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট একাংশ): এই পাঁচ সদস্যের প্যানেলেও কোনো ভিপি প্রার্থী নেই। জিএস পদে জাহিদুল ইসলাম ইমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) আংশিক প্যানেল: ৩ সদস্যের এই প্যানেলে সহ-সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) প্রার্থী হিসেবে মো. সজিব আহম্মদ জেনিচ এবং কার্যকরী সদস্য পদে রোকেয়া আমিন অনুসূয়া ও মো. সুমন হোসেন রয়েছেন।

স্বতন্ত্র প্যানেলসমূহ:

‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’: ভিপি পদে গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু এবং জিএস পদে মো. শাকিল আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’: ভিপি পদে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের মুখপাত্র মো. মাহফুজুল ইসলাম মেঘ এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে মো. নাজমুল ইসলাম লড়বেন।

গত ২৮ আগস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালিয়েছেন। আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

এসপি