ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

১১০২ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ আসামি ৬৮

২০২৫ মে ১৯ ২০:০১:১৯
১১০২ কোটি টাকা আত্মসাৎ: ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ আসামি ৬৮

ডুয়া ডেস্ক: নামসর্বস্ব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ১১০২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার, ১৯ মে, দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলাগুলো দায়ের করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. তানজির হোসেন। জানা গেছে, অভিযুক্তদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম দুই মামলাতেই রয়েছে।

প্রথম মামলা: ৫৫৩ কোটি টাকার দুর্নীতি,

প্রথম মামলায় মেসার্স হুদা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৫৫৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমসহ ৩১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা নিজেদের মধ্যে যোগসাজশ করে ভুয়া বিনিয়োগ প্রস্তাব তৈরি করেন এবং জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে প্রথমে ১০৫ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করান। পরে সীমা অতিক্রম করে ধাপে ধাপে এই ঋণ ৫৫৩ কোটি টাকায় পৌঁছায়।

ঋণ অনুমোদনের ক্ষেত্রে যথাযথ সিআইবি রিপোর্ট, ট্রেড লাইসেন্স, সম্পদ মূল্যায়ন বা আইনগত নথি ছিল না। অর্থ বিতরণের পর তা বিভিন্ন ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরিয়ে ফেলে শেষ পর্যন্ত এস আলম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানে ১৩০ কোটি টাকা হস্তান্তর করা হয়। এতে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের গুরুতর লঙ্ঘন ঘটেছে বলে দুদকের অভিযোগ।

দ্বিতীয় মামলা: ৫৪৯ কোটি টাকার আত্মসাৎ

দ্বিতীয় মামলায় মেসার্স সাফরান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের আরেকটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৫৪৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে জাল কাগজপত্রের ভিত্তিতে প্রথমে ১৫২ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করানো হয়। এরপর কোনো অর্থ পরিশোধ না করেই বারবার ঋণসীমা বাড়িয়ে ২০২৩ সালে তা ৫৪৮ কোটি টাকায় পৌঁছায়। এসব টাকা ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে স্থানান্তরের পর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠানে জমা দেওয়া হয়।

দুদক জানিয়েছে, উভয় মামলার প্রধান আসামি এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম। তার সঙ্গে আরও রয়েছেন ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ডিএমডি, এএমডি, ইভিপি ও শাখা ব্যবস্থাপকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা।

তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা অনুযায়ী মামলা হয়েছে।

দুদকের ভাষ্যমতে, এটি একটি গুরুতর আর্থিক অপরাধ এবং এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। অনুসন্ধান ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রমাণ মিললে আরও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে