ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বন্যা মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের ৩,২৮০ কোটি টাকার সহায়তা

২০২৫ মে ১৫ ১৬:১১:১৫
বন্যা মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের ৩,২৮০ কোটি টাকার সহায়তা

ডুয়া ডেস্ক: বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব ও ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ২৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এ অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা।এ ঋণ সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুমোদন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস জানায়, বাংলাদেশের জন্য সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ এই ঋণ অনুমোদন করেছে। অনুমোদিত অর্থ ২০২৪ সালের আগস্টে সংঘটিত ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর পুনরুদ্ধার, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নির্মাণ ও সংস্কার, কৃষি খাতের উন্নয়ন এবং মানুষের জীবিকা সুরক্ষায় ব্যবহার করা হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, ‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকোভার, ইমারজেন্সি প্রিপেয়ারনেস অ্যান্ড রেসপন্স (বি-স্ট্রং)’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের গ্রামীণ এবং বন্যা সুরক্ষা বিষয়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্গঠন করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ বিষয়ক অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতিতে একটি অগ্রণী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি এবং ঘন ঘন ও তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশের অর্থনীতি এবং জনগণের জীবনযাত্রার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।

তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রস্তুতি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে অবকাঠামো, কৃষি ও জীবিকার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি ভবিষ্যতের বন্যার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা অর্জনে সহায়ক হবে। এর আওতায় ৭৯টি বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও পুনর্বাসন করা হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু সহিষ্ণু করে সংযোগকারী রাস্তা ও সেতুগুলো তৈরি করা হবে। স্বাভাবিক সময়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এছাড়া বন্যা সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মেরামত ও পুনর্বাসন এবং খাল পুনঃখননের কাজও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়নেও সহায়তা করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট স্বর্ণা কাজী এই অর্থায়ন প্রসঙ্গে বলেন, এই প্রকল্পটি একই সঙ্গে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের চাহিদা এবং দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ স্থিতিশীলতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন অ-ভৌত কার্যক্রমের সমন্বয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ভবিষ্যতে বন্যার ঝুঁকি কমিয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রকল্পের আওতায় বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষের আয় বৃদ্ধিতে আর্থিক সহায়তা এবং বাজারভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে অস্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করা হবে, যার ফলে ৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবেন।

কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে অন্তত ৬৫ হাজার কৃষি পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে উচ্চ ফলনশীল, জলবায়ু সহনশীল ও টেকসই ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি এবং উন্নত সেচ সুবিধার মাধ্যমে। পাশাপাশি, কৃষকদের মধ্যে টেকসই কৃষি চর্চা সম্পর্কে জ্ঞান বিনিময়ের জন্য কৃষক দল গঠন করা হবে। এতে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে