ঢাকা, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

জুলাই আন্দোলনে নীরবতার কারণ জানালেন সাকিব

২০২৫ এপ্রিল ১৬ ১২:৩৯:৫৯
জুলাই আন্দোলনে নীরবতার কারণ জানালেন সাকিব

ডুয়া ডেস্ক : গেল বছর জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল ছিল সারা দেশ। ছাত্র-জনতা যখন রাস্তায়, তখন অনেক তারকাও একাত্মতা প্রকাশ করেন। কিন্তু সে সময় চুপ ছিলেন বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।

আন্দোলনের গরম সময়ে সাকিবকে দেখা গিয়েছিল কানাডার এক সাফারি পার্কে পরিবার নিয়ে ঘুরতে। সেই হাসিমাখা ছবিটি পরে পোস্ট করেন তার স্ত্রী, যা মুহূর্তেই নেটমাধ্যমে সমালোচনার জন্ম দেয়। উঠেছিল নানা প্রশ্ন—একজন জাতীয় তারকা হয়ে কীভাবে এত বড় আন্দোলনের সময় নিরুত্তাপ থাকতে পারেন?

সম্প্রতি দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি তখন বেশ কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে মেজর লিগ ক্রিকেট (এমএলসি) খেলতে গেলাম, তারপর কানাডায়। ছবিটি কানাডায় তোলা। আমি নিজে এটি পোস্ট করিনি। তবুও, আমি এর দায়ভার নিচ্ছি। এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক ভ্রমণ ছিল। এখন বুঝতে পারছি, হ্যাঁ, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমার আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল।'

‘আমি এটা স্বীকার করছি। তবে আমার মনোযোগ সব সময় ক্রিকেটের দিকে ছিল সংসদ সদস্য হওয়ার আগে এবং পরেও। আমাকে কখনো রাজনীতিতে জড়িত হতে বলা হয়নি। আমাকে সব সময় বলা হয়েছে, শুধু ক্রিকেট খেলো। তাই আমি সেদিকেই মনোযোগ দিয়েছি।’

ক্রিকেটার সাকিবের রাজনীতিতে নামাও নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এর ব্যাখ্যায় ইংরেজি দৈনিকটিকে সাকিব বলেন, ‘আমি মাত্র মাস ছয়েকের মতো রাজনীতিতে ছিলাম। নির্বাচনের পর সম্ভবত ৩ দিন মাগুরায় গিয়েছি। ৪-৫ মাসই ক্রিকেট নিয়ে ছিলাম। রাজনীতি করার বা পরিস্থিতি বুঝার সময় পেলাম কই? তখনকার প্রধানমন্ত্রী আমাকে বললেন, তোমাকে রাজনীতি করতে হবে না, ক্রিকেটে মনোযোগ রাখো। আমি সেই পরামর্শ মেনে চললাম।’

আরও যোগ করেন, ‘আর কোনো এজেন্ডা তো ছিল না। আমার ভাবনাই ছিল যতদিন পারি ক্রিকেট খেলে যাব। আমি চাইলেই ক্রিকেট ছেড়ে ফুল টাইম পলিটিশিয়ান হতে পারতাম। আমার লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা। এরপর আস্তে ধীরে বুঝেশুনে রাজনীতিতে মনোযোগ দিতাম। হুট করে রাজনীতিতে জড়িয়ে যেতে চাইনি। মানুষের দুটি মৌলিক অধিকার আছে- একটা ভোট দেওয়া আরেকটা নিজের পছন্দের রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া।’

রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ভুল ছিল না জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘যারা বলছে রাজনীতিতে আসা ঠিক হয়নি তাদের বেশিরভাগই মাগুরার বাইরের। মাগুরার ভোটাররা বিশ্বাস করছে কোনটা- এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা আমাকে না চাইলে ভোট দেবে না। ব্যাপারটা তো খুব সিম্পল। আমি যদি আজও নির্বাচনে দাঁড়াই, মাগুরার লোকজন আমাকে ভোট দিতে আসবে কারণ তারা বিশ্বাস করে আমি তাদের জন্য কিছু করতে পারব। আমি বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চেয়েছি। আপনি সিস্টেমের মধ্যে না থাকলে সিস্টেম পরিবর্তন করবেন কীভাবে? এখন যারা দেশ চালাচ্ছে, সিস্টেমের বাইরে থাকলে কি কোনো পরিবর্তন আনতে পারত?’

‘এটা মানুষের ব্যাপার। আমি মনে করি যখন আমি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি তখন ব্যাপারটা ঠিক ছিল। আমি এখনও বিশ্বাস করি আমি ঠিক ছিলাম। কারণ আমার ভাবনা ছিল মাগুরার মানুষের জন্য কাজ করা। আমার মনে হয়েছে ওদের জন্য কিছু করতে পারব, তারাও আমাকে চায়। আমার নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। আমার মনে হয় না কেউ সন্দেহ প্রকাশ করবে যে আমি যদি আবারো দাঁড়াই আবারো জয়ী হবো।’

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে