ঢাকা, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

২০২৫ এপ্রিল ৩০ ১৯:৪৯:২০
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ডুয়া ডেস্ক: ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)-এর বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শ্রম আইনের তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানটি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, আর কর্মকর্তারা নিজেদের সুবিধামতো নিয়ন্ত্রণ করেন কারখানার কার্যক্রম।

অবশেষে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের লিফ কারখানার চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) খুলনা শ্রম আদালতে মামলাটি করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের কুষ্টিয়া কার্যালয়ের শ্রম পরিদর্শক (সাধারণ) ফারজুন ইসলাম।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া অফিসের উপমহাপরিদর্শক ফরহাদ ওহাব।

মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন—ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিশা আব্রাহাম, হেড অব অপারেশনস জর্জ লুইস মার্সেডো, সেক্রেটারি ও সিনিয়র লিগ্যাল কাউন্সেল সৈয়দ আফজাল হোসেন এবং কুষ্টিয়ার চৌড়হাস এলাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত লিফ কারখানার প্লান্ট ম্যানেজার মুকিত আহমেদ চৌধুরী।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার অফিসের উপ-মহাপরিদর্শক ফরহাদ ওহাব বলেন, ‘শ্রম আইনের বিধান না মানায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। খুলনা শ্রম আদালতে মামলাটি করা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি)-এর বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আসছেন শ্রমিকরা। এই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) থেকে ২২ দফা দাবিতে কুষ্টিয়ায় বিএটি লিফ ফ্যাক্টরির শতাধিক মৌসুমি শ্রমিক বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন।

টানা এক সপ্তাহ ধরে কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত লিফ ফ্যাক্টরির মূল গেটের সামনে এই কর্মসূচি চলছে। এখনও পর্যন্ত তারা অবস্থানে রয়েছেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা বলেন, ‘আমরা বিএটিবির মৌসুমি শ্রমিক। আমরা ২২ দফা দাবি আদায়ে অনেক আগে থেকে আন্দোলন করে আসছি। আমাদের বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও দাবি মানা হয় না। আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৭ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি। আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

শ্রমিকদের দাবিগুলো হচ্ছে—প্রতি বছর নতুন করে নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রথা বন্ধ করে একটি স্থায়ী নিয়োগপত্র প্রদান, কোম্পানির মোট মুনাফার ৫ শতাংশ শ্রমিকদের মধ্যে বণ্টন, প্রভিডেন্ট ফান্ড সুবিধা চালু, শ্রমিকদের জন্য ঝুঁকি বিমা নিশ্চিতকরণ এবং ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের অধিকার নিশ্চিত করা।

অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শ্রমিকরা এসব দাবির সমর্থনে হাতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এসব নিয়ে তারা কারখানার প্রধান ফটকসহ আশপাশের এলাকায় মিছিল করেন। এ সময় তারা ‘শ্রম দিলাম, টাকা কই’ এবং ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’—এমন প্রতিবাদী স্লোগান দেন।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে