ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
বাংলাদেশ-কানাডা সমঝোতা: অবৈধ অভিবাসীদের ফেরার সুযোগ

ডুয়া ডেস্ক : কানাডায় বসবাসরত অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া সহজ ও সুশৃঙ্খল করতে অটোয়ার সঙ্গে ঢাকার একটি সমঝোতা সইয়ের প্রস্তুতি চলছে। এ লক্ষ্যে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরস (এসওপি) যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে।
এই এসওপির আওতায় উভয় দেশ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব যাচাই ও প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করেছে। কাঠামো অনুযায়ী, কানাডা থেকে ফেরত আসা অবৈধ বাংলাদেশিদের বিমান ভাড়ার ব্যয় বহন করবে কানাডা সরকার।
এসওপির অধীনে চার ধরনের অবৈধ অভিবাসী এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত নিয়েছে।
নতুন এই উদ্যোগের মাধ্যমে কানাডা ও বাংলাদেশের মধ্যে অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে একটি কার্যকর পন্থা তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এসওপির আওতায় চার ধরনের অবৈধ বাংলাদেশি দেশে ফেরার সুযোগ পাবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন:
১. যাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বা প্রাথমিকভাবে নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।২. যারা কানাডায় বৈধভাবে থাকার কোনো অনুমতি নেই।৩. যারা নির্বাসনের আদেশ পেয়েছেন এবং প্রশাসনিক বা বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরও কানাডায় অবস্থান করছেন।৪. যাদের কাছে বৈধ ভ্রমণ নথি নেই।
এসওপির এই কাঠামোর মাধ্যমে তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও সহজ ও কার্যকর হবে।
সূত্র জানায়, এই এসওপি কোনো আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা তৈরি করবে না; বরং এটি নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন প্রবাহ নিশ্চিত করার জন্য একটি কাঠামো হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশি নাগরিকত্ব যাচাই ও ভ্রমণ নথি প্রদান:
কানাডায় অবস্থানরত ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন নথি যাচাই করবে। যাদের কাছে বৈধ পরিচয়পত্র রয়েছে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি কর্তৃক প্রদত্ত বাংলাদেশি পাসপোর্ট বা স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করা হবে। নথির সত্যতা প্রমাণিত হলে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জরুরি ভ্রমণ নথি ইস্যু করা হবে।
যাদের কাছে পাসপোর্টের ফটোকপি রয়েছে:
কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি যদি বাংলাদেশি মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের ফটোকপি সরবরাহ করে, তবে তা যাচাই করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে ভ্রমণ নথি প্রদান করা হবে। এ ছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি তার পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারে, তবে কূটনৈতিক বা কনস্যুলার প্রতিনিধির মাধ্যমে সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা করা হবে।
ব্যক্তিগত তথ্য ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
কানাডা কর্তৃপক্ষ নাগরিকত্ব যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম, পিতা-মাতা ও জীবনসঙ্গীর নাম, স্থায়ী ঠিকানা, ছবি, প্রয়োজন হলে ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবে। এই তথ্য শুধুমাত্র এসওপি বাস্তবায়নের জন্য ব্যবহার করা হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত ও শারীরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তিরাই এই তথ্য দেখতে পারবে এবং তথ্য ফাঁস রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসওপি অনুযায়ী, ইস্যুকৃত জরুরি ভ্রমণ নথি ৯০ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এবং প্রয়োজন হলে এটি পুনরায় ইস্যু করা যাবে। দেশে ফেরানোর জন্য প্রত্যাবর্তনের জন্য সব পরিবহন খরচ বহন করবে কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি। ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের জন্য বাণিজ্যিক ফ্লাইট বা বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইট ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। চার্টার্ড ফ্লাইটের ক্ষেত্রে প্রতি রাতে সর্বোচ্চ ৫০ জন অননুমোদিত বাংলাদেশি ফেরত পাঠানো যাবে।
কূটনৈতিক যোগাযোগ ও তদারকি:
কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি ও বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একটি তালিকা বিনিময় করা হবে। প্রয়োজনে এই তালিকা ক্ষণে ক্ষণে হালনাগাদ করা হবে। এসওপির কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ ও উন্নত করার জন্য ৬ মাস অন্তর যৌথ বৈঠকের আয়োজন করা হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি এবং কানাডায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও কনস্যুলার প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।
এসওপি অনুযায়ী, যেসব বাংলাদেশি কানাডায় আটক রয়েছেন, তাদের কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ দেওয়া হবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল তাদের পরিচয় যাচাই করতে সরাসরি কানাডায় গিয়ে সাক্ষাৎকার নিতে পারবেন এবং এ সংক্রান্ত ভ্রমণ ব্যয় কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি বহন করবে।
জানা গেছে, কানাডায় কয়েকশ বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী রয়েছে। এদের মধ্যে কাউকে কাউকে আটক রাখা হয়েছে। আর যারা আটক হয়নি তাদের রাখা হয়েছে বিশেষ নজরদারিতে। এসওপি সই হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে তাদের দেশে ফেরত পাঠাবে কানাডা সরকার।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাতিল হচ্ছে ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স, তালিকায় শেয়ারবাজারের ১৪টি
- ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ১.৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রির ঘোষণা
- শেয়ারবাজারের ৬৬ কোম্পানির প্রতি বিএসইসি’র কঠোর বার্তা
- গভীর রাতে ঢাবি শিবির সভাপতির ফেসবুক পোস্টে তোলপাড়
- বনানীতে ঢাবির সাবেক ছাত্রীর ম’রদেহ উদ্ধার
- শেয়ারবাজারের ১৮ ব্যাংককে ডিভিডেন্ড না দেওয়ার নির্দেশ
- ঢাবির পীরগাছা উপজেলা সংগঠনের নেতৃত্বে রবিউল ও সৈকত
- ড. ইউনূসকে ‘আক্রমণ’!
- শেয়ারবাজার ধসের দায় চাপছে বিএসইসি নেতৃত্বের ওপর
- ঈদের ছুটি নিয়ে নতুন প্রস্তাবনা
- জেড ক্যাটাগরি ও ন্যুনতম শেয়ারধারণে ব্যর্থ কোম্পানিতে বসছে স্বতন্ত্র পরিচালক
- ফাঁস হলো হাসনাত-সার্জিসকে হ-ত্যার ভ'য়ঙ্কর পরিকল্পনা
- মন্দার বাজারে আলো ছড়িয়েছে ২০ শেয়ার
- শিক্ষা ক্যাডারে ৪৯তম বিশেষ বিসিএস সার্কুলার প্রকাশে পিএসসির চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপি
- ঘুরে দাঁড়ানোর পথে দেশের শেয়ারবাজার: দৃশ্যমান হচ্ছে ইতিবাচক পদক্ষেপ