ঢাকা, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ভারত থেকে ভেসে আসা পচা কাঠ বিক্রি হচ্ছে লাল চন্দন ভেবে 

২০২৫ অক্টোবর ০৮ ১০:৩৮:০৪

ভারত থেকে ভেসে আসা পচা কাঠ বিক্রি হচ্ছে লাল চন্দন ভেবে 

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের ফলে ভারত থেকে ভেসে আসা লালচে রঙের গাছের গুঁড়ি নৌকা ও বাঁশের ভেলায় সংগ্রহ করতে দেখা গেছে স্থানীয়দের। রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে কালজানি নদী হয়ে দুধকুমার নদী ও চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদে এসব কাঠ ভেসে আসতে শুরু করে। উৎসুক জনতা সকাল থেকেই নদীতে নেমে কাঠ ধরার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন।

এদিকে লোকজনকে বিভ্রান্ত করে এই লালচে কাঠকে ‘রক্ত চন্দন’ বা ‘লাল চন্দন কাঠ’ হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। কেউ কেউ এগুলো বিক্রির জন্য সংগ্রহ করছেন, আবার কেউ জ্বালানি কাঠ হিসেবেও কিনছেন। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নে একটি বড় লালচে গাছের গুঁড়ি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জের দামাল গ্রামের আব্দুল মোতালেব বলেন, “চারজন মিলে ৫০ ফুটের মতো একটি লালচে গাছ তুলেছি। দেখতে একদম চন্দন কাঠের মতো। আমরা দাম চেয়েছি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তবে ১ লাখ ২০ হাজারে বিক্রি করব।” অন্যদিকে স্থানীয়রা জ্বালানি কাঠ হিসেবে প্রতি গাছের গুঁড়ি ১২ হাজার টাকায় কিনছেন।

জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাদিকুর রহমান জানান, এই কাঠগুলো দীর্ঘদিন পানিতে থাকার কারণে লালচে হয়ে গেছে এবং প্রকৃত চন্দন কাঠ নয়। শ্বেত বা রক্ত চন্দনের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। কুড়িগ্রামের দিকে ভেসে আসা এসব কাঠ মূলত ভারতের নদীতে ফেলা পচা কাঠ।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও উদ্ভিদবিদ মির্জা নাসির উদ্দিন বলেন, “প্রায় সব কাঠেই ট্যানিন ও ফেনলিক যৌগ থাকে। দীর্ঘদিন পানিতে ভেজা থাকার কারণে বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে জারণ হয়ে লালচে বা বাদামি রঙ তৈরি হয়। এই কারণে সাধারণ কাঠও চন্দন কাঠের মতো দেখায়, কিন্তু প্রকৃত চন্দনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।” তিনি আরও বলেন, চন্দন কাঠের বিশেষ গন্ধ থাকে যা শুকনো কাঠ কেটে বোঝা যায়, কিন্তু এই লালচে কাঠে কোনো ধরনের গন্ধ বা তেলীয় উপাদান নেই।

এমজে

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত