ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩০ ভাদ্র ১৪৩২
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় তিন বাংলাদেশির গৌরবময় যাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবময় মুহূর্ত তৈরি হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৌদি আরবের মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশের তিন আলেম। তারা হলেন—শায়খ শারীফ আহমাদ আল মাদানী, শায়খ এরশাদুর রহমান এবং মুশাহিদ দেওয়ান। তিনজনই ঢাকা ও চট্টগ্রামের কওমি মাদরাসা থেকে দাওরা হাদিস সম্পন্ন করেছেন এবং দীর্ঘদিনের অধ্যবসায় শেষে আজকের এ অবস্থানে পৌঁছেছেন।
শায়খ শারীফ আহমাদ আল মাদানী
হাদিস বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন শায়খ শারীফ আহমাদ আল মাদানী। তিনি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মসজিদে নববী একাডেমিতে শিক্ষক, পরীক্ষক ও প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার আন্দিউড়া গ্রামে তাঁর জন্ম।
২০১২ সালে সৌদি সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। সেখান থেকে প্রথমে আরবি ভাষায় ডিপ্লোমা, পরে হাদিস বিভাগে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এরপর ড. আবদুল্লাহ বিন সালেম আল আহমাদির তত্ত্বাবধানে এমফিল করেন। তাঁর থিসিসের শিরোনাম ছিল ‘আল-আহাদিস আযযাইদাহ ফি কিতাবি ফাতহিল গাফফার লিরুবায়ি আলা কিতাবি মুনতাকা আখবার লিল মাজদি ইবনে তাইমিয়াহ’। বর্তমানে তিনি একই বিভাগে পিএইচডি করছেন।
এর আগে তিনি পুরান ঢাকার জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদ মাদরাসা থেকে দাওরা হাদিস ও ইফতা সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে বেফাক পরীক্ষায় সারাদেশে মেধাতালিকায় ১৬তম স্থান এবং দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় জিপিএ ৫ অর্জন করেন। এছাড়া ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ফাজিল ডিগ্রিও অর্জন করেছেন।
শায়খ এরশাদুর রহমান
শায়খ এরশাদুর রহমান নিয়োগ পেয়েছেন মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটে। তাঁর বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম পানখালী গ্রামে।
তিনি প্রাথমিকভাবে হ্নীলা দারুস সুন্নাহ মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। এরপর চট্টগ্রামের জামেয়া দারুল মা‘আরিফ আল-ইসলামিয়া থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রথমে আরবি ভাষা বিভাগে অনার্স, পরে ভাষাতত্ত্বে মাস্টার্স শেষ করেন। গবেষক ড. যুবাইর বিন মুহাম্মাদ আইয়্যুবের তত্ত্বাবধানে তিনি এমফিল সম্পন্ন করেন। তাঁর গবেষণার শিরোনাম ছিল ‘আসরুল লুগাতুল আরাবিয়্যাহ ফিল লুগাতিল বাংগালিয়্যাহ: দিরাসাতুন তাকাবুলিয়্যাহ’ (বাংলা ভাষায় আরবি ভাষার প্রভাব : একটি তুলনামূলক পর্যালোচনা)। বর্তমানে তিনি পিএইচডি করছেন।
মুশাহিদ দেওয়ান
মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মুশাহিদ দেওয়ান। তাঁর বাড়ি নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে।
২০১৬ সালে সৌদি সরকারের বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি মদিনায় যান। সেখানে আরবি ভাষায় অনার্স ও ভাষাতত্ত্বে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে এমফিল করছেন। এর আগে তিনি ঢাকার দারুল উলুম মাদানীনগর মাদরাসা থেকে দাওরা হাদিস শেষ করেন এবং বেফাক বোর্ড পরীক্ষায় সারাদেশে মেধাতালিকায় দশম স্থান অর্জন করেন। পাশাপাশি দাখিল ও আলিম পরীক্ষায়ও জিপিএ ৫ পেয়েছিলেন।
বাংলাদেশি তিন আলেমের এই সাফল্য শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং দেশের কওমি শিক্ষা ব্যবস্থার জন্যও এক অনন্য স্বীকৃতি। আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যে প্রতিভা ও মেধা দিয়ে জায়গা করে নিতে পারছে, মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার এই নিয়োগ তার উজ্জ্বল প্রমাণ।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- পাঁচ কোম্পানির কারণে থমকে গেল শেয়ারবাজারের উত্থান