ঢাকা, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২
সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি ম্যারিকো বাংলাদেশ সাবেক কর্মীদের ১,৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটির এক্স ম্যারিকোনিয়ান এসোসিয়েশন ম্যারিকো বাংলাদেশ। শুক্রবার (০৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি কনফারেন্সে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক্স ম্যারিকোনিয়ান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বলেন, কোম্পানি বাংলাদেশের শ্রম আইন লঙ্ঘন করে সাবেক কর্মীদের পাওনা পরিশোধ না করে গড়িমসি করছে। তিনি দাবি করেন, গত ১৭ বছরে সাবেক ১১৩ জন কর্মী কোম্পানির বিরুদ্ধে মজুরি মামলায় ঢাকা শ্রম আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিশদ অনুযায়ী, ২০০৬ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কোম্পানিতে কর্মরত সাবেক ১৯ জন ২০১৪ সালে ঢাকা শ্রম আদালত-৩ এ মামলা নং ৬৯১/২০১৪ দায়ের করেন। পরে ২০২৫ সালের ১২ আগস্ট আরও ৯৪ জন প্রাক্তন শ্রমিক দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেন, যা ঢাকা শ্রম আদালত-১ এ বি.এল.এ নং ৮৬৫/২০২৫ হিসেবে নিবন্ধিত।
সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের শ্রম আইনের ২৩৪ ধারায় শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিল গঠন বাধ্যতামূলক। কিন্তু ২০০৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড আইন অমান্য করে এই তহবিল গঠন করেনি। ২০১৪ সাল থেকে তহবিল গঠন শুরু করা হলেও, সাবেক ১১৩ জন কর্মী এখনও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
প্রাক্তন কর্মীদের দাবি, প্রকাশিত অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, কোম্পানির ৯০ শতাংশ শেয়ার মালিক ম্যারিকো লিমিটেড (ইন্ডিয়া) এই সময়ে কোম্পানির বিপুল মুনাফা ইন্ডিয়াতে রেমিট করেছে। শুধু ২০২৪-২৫ অর্থবছরেই ৩৮৪০ শতাংশ ডিভিডেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রায় ১,০৭৭ কোটি টাকা ইন্ডিয়াতে রেমিট হয়েছে। এটি ১৭ বছরের মোট রেমিটযোগ্য অর্থের প্রায় ৩৪ শতাংশ। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম কোয়ার্টারেও ৬০০ শতাংশ ডিভিডেন্ট ঘোষণা করা হয়েছে।
ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক কর্মীরা তাদের বকেয়া পাওনা আদায়ের জন্য কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তাদের দাবি, যতক্ষণ পর্যন্ত শ্রমিকদের প্রাপ্য মজুরি পরিশোধ না করা হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত যেন কোম্পানিটি ভারতে কোনো প্রকার মুনাফা পাঠাতে না পারে। এই বিষয়ে গণমাধ্যমকে সোচ্চার হওয়ার জন্য এক্স ম্যারিকোনিয়ান অ্যাসোসিয়েশন আহ্বান জানিয়েছে।
সাবেক কর্মীরা বলেছেন, দীর্ঘদিন কাজ করার পরও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তারা আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে তারা তাদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।
তারা আরও জানান, প্রায় ১৭ বছর ধরে বঞ্চিত থাকার পর, তাদের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে দুটি স্বনামধন্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস ফার্ম থেকে সনদ সংগ্রহ করা হয়েছে। এই সনদগুলোতে কোম্পানির বাৎসরিক অডিট রিপোর্টের ভিত্তিতে শ্রম আইন, ২০০৬-এর ধারা ২৩৪ ও ২৪০(৩) অনুযায়ী তাদের বকেয়া দাবির পরিমাণ ১৮২৩ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছে, যা আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
এএসএম/
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- বিও অ্যাকাউন্টের ফি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিল বিএসইসি
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে দ্রুত মুনাফা তোলার ৫টি ট্রেডিং টিপস
- রবির মাধ্যমে দেশে আসছে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- আট কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মাথাব্যথার ১১ শেয়ার
- চার জেডের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের সর্বোচ্চ আস্থা
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- মুনাফা কমলেও ডিভিডেন্ড বেড়েছে ওয়ালটনের