ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাড়তি গোয়েন্দা নজরদারি

পবিত্র ঈদুল আজহা সারা দেশে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শনিবার (৭ জুন) উদযাপিত হবে। ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে, কেনা-বেচা চলছে শপিংমলগুলোতে। অন্যদিকে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা ছাড়ছেন মানুষজন। এতে করে ঢাকা শহর ধীরে ধীরে ফাঁকা হচ্ছে।

তাই ঈদের আগ মুহূর্তে ও ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরইমধ্যে ঢাকায় বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে পুলিশ, র‍্যাব ও আনসার সদস্য-সহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া ঢাকায় বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।

আরো জানা যায়, বিভিন্ন সরকারি বাহিনীর সদস্যরা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে সক্রিয় হয়েছেন। প্রতিটি ঈদগাহে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। এছাড়া যেহেতু রাজধানী ছেড়ে মানুষজন নিজ নিজ বাড়ি যাচ্ছেন ঈদ উদযাপনের জন্য, সে কারণে ফাঁকা হতে যাওয়া ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে। ফাঁকা ঢাকায় রাস্তা-ঘাট ও বাসা-বাড়িতে যেন চুরি-ছিনতাই না হয় সেজন্য নেওয়া হয়েছে এলাকাভিত্তিক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়াও নিয়মিত টহলের পাশাপাশি যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে র‌্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।

ঈদকে সামনে রেখে রাজধানী ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। ডিএমপি সূত্র জানায়, বিভিন্ন এলাকায় স্যুইপিং, আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেকটর দিয়ে চেকপোস্ট স্থাপন এবং মোবাইল পেট্রোল বাড়ানো হয়েছে। ব্যাংক, এটিএম বুথ এবং আবাসিক এলাকাগুলোতেও বাড়তি নজরদারি চলছে। ট্রাফিক বিভাগ চেকপোস্ট ও গাড়ি তল্লাশি কার্যক্রমও বাড়িয়েছে।

ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ঈদের আগে, ঈদের দিন এবং পরবর্তী ছুটিতে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এদিকে র‍্যাব জানিয়েছে, সারাদেশজুড়ে গোয়েন্দা নজরদারি, সিসিটিভি মনিটরিং, মোবাইল টহল, কন্ট্রোলরুম এবং চেকপোস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। সাইবার অপরাধ ও অনলাইনে পশু কেনাবেচায় প্রতারণা ঠেকাতে বিশেষ সাইবার মনিটরিং সেলও কাজ করছে। কোনো ধরনের নাশকতার নির্ভরযোগ্য তথ্য না পাওয়া গেলেও সতর্ক অবস্থান বজায় রেখেছে র‍্যাব।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, বড় ঈদগাহগুলোতে নিরাপত্তা সুইপিং, সিসিটিভি কাভারেজ এবং পশুবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি রোধে নিয়মিত টহল চলছে।

এছাড়া সরকারি সূত্র জানায়, বিজিবি সীমান্ত এলাকায় এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় তৎপর থাকবে। ঈদের জামায়াত ও উৎসবস্থলগুলোতে আনসার সদস্যদেরও মোতায়েন করা হবে। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সদস্যরা সাদা পোশাকে মাঠে কাজ করবেন।

ঈদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) গাবতলী পশুর হাট পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘ঈদের সময় রাজধানীর পরিস্থিতি মাশাল্লাহ খুব ভালো থাকবে। জনগণ নিশ্চিন্তে ঈদ উদযাপন করবে, আর ইউনিফর্ম পরিহিত বাহিনী সবসময় মাঠে থাকবে।’