ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৫:২১:১৯

উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান পরিবেশ উপদেষ্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বাইরের অর্থায়নের অপেক্ষা না করে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা, কমিউনিটি ক্ষমতায়ন এবং মানুষকেন্দ্রিক নীতি গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) পাকিস্তানের ইসলামাবাদের মোভেনপিক, সেন্টোরাসে আয়োজিত ২৮তম সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্সের সম্মানিত অতিথিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যদি মানুষ জলবায়ু বিপর্যয়ে ভুগে এবং নিরাপদ পানি না পায়, তবে উন্নয়নের কোনো মূল্য থাকে না। তাই ব্যয়বহুল মেগা প্রকল্পের পরিবর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষায় মনোযোগ দিতে হবে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকার, সিভিল সোসাইটি ও বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করলে জনগণের হতাশা ইতিবাচক পরিবর্তনের শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে। তার মতে, প্রকৃত স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করতে হলে নীচ থেকে শুরু করতে হবে—সহযোগিতা, আচরণগত পরিবর্তন এবং জনআস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।

উপদেষ্টা সতর্ক করে দেন যে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজন ও স্বার্থপর মনোভাব জাতীয় ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকারকে দুর্বল করছে, ফলে যৌথ অগ্রগতির সুযোগ হারাচ্ছে। তিনি শ্রীলঙ্কা থেকে নেপাল পর্যন্ত সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের উদাহরণ টেনে বলেন, এ ধরনের অস্থিরতা শাসনব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা, অর্থনৈতিক পথনির্ধারণ পুনর্গঠন এবং তরুণ নেতৃত্বকে এগিয়ে আনার সুযোগ তৈরি করতে পারে।

বিশ্বব্যাপী তরুণদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকের যুবসমাজ শুধু জলবায়ু ন্যায়বিচারই নয়, বরং গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মর্যাদারও দাবি করছে। ভবিষ্যতের পৃথিবী, যেখানে খাদ্য ও পানি সংকট, চরম আবহাওয়া এবং জলবায়ু বাস্তুচ্যুতি আরও বেড়ে যাবে, তা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সহনীয় হবে না যদি এখনই কাঠামোগত সংস্কার না আনা হয়।

এসডিজি এবং জলবায়ু অর্থায়ন প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতির ঘাটতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সুন্দর একটি এসডিজি মেন্যু দেওয়া হয়েছে, কিন্তু সম্পদের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়নি। অন্তঃসারশূন্য ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচারের বদলে ঋণ দেওয়ার নীতি সমালোচনার যোগ্য।

অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের অ্যাক্টিং প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি ২৩টি দেশের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান। এছাড়া বক্তব্য দেন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউট (এসডিপিআই)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আবিদ কিউ. সুলেরি এবং পাথ-এর এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ অঞ্চলের প্রধান নাবিল গোহীর।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত