ঢাকা, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

ইনিংস ব্যবধানে জয় পেল বাংলাদেশ

২০২৫ এপ্রিল ৩০ ১৮:২৫:২৭
ইনিংস ব্যবধানে জয় পেল বাংলাদেশ

ডুয়া ডেস্ক: আজকের দিনটি ছিল পুরোপুরি 'মিরাজময়'। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর বল হাতে ৫ উইকেট নিয়ে দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার অনবদ্য নৈপুণ্যে চট্টগ্রামে মাত্র তিন দিনেই ইনিংস ও ১০৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের মাধ্যমে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র হলো। দীর্ঘদিন পর ঘরের মাঠে টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা—টানা ৬ হারের পর এ জয় অনেকটা স্বস্তির।

চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে জিম্বাবুয়ে করে ২২৭ রান। জবাবে বাংলাদেশ দুইটি সেঞ্চুরির সাহায্যে ৪৪৪ রান তোলে। ফলে প্রথম ইনিংসে ২১৭ রানের বড় লিড নেয় স্বাগতিকরা। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে চাপে পড়ে ১১১ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ইনিংস শুরু করেন তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট নেওয়া এই বাঁহাতি স্পিনারের ওপর নতুন বলেই ভরসা রাখেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তাইজুলও সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন যথারীতি।

ইনিংসের সপ্তম ওভারেই বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন তাইজুল ইসলাম। অফ স্টাম্পের বাইরের একটি ডেলিভারিতে ডিফেন্স করতে গিয়ে আউটসাইড এজে বল স্লিপে পাঠান ব্রায়ান বেনেট। দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা সাদমান ইসলাম সহজেই ক্যাচটি তালুবন্দি করেন। মাত্র ৬ রান করে আউট হলে ৮ রানের মাথায় ভেঙে যায় জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী জুটি।

দুই বলের ব্যবধানে আবারও আঘাত হানেন তাইজুল। এবার তার শিকার হন নিক ওয়েলচ। বলটি অফ স্টাম্পের বাইরের দিকে যাচ্ছিল ভেবে ছেড়ে দেন ওয়েলচ, কিন্তু বল সোজা গিয়ে আঘাত করে প্যাডে। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলে নেয় বাংলাদেশ। কোনো রান না করে দুই বল খেলে উইকেট হারান ওয়েলচ।

১১তম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসেই উইকেট তুলে নেন নাঈম হাসান। তার টার্নিং ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত হন শন উইলিয়ামস। ব্যাটের আউটসাইড এজে বল চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে, যেখানে সাদমান আবারও অসাধারণ ক্যাচ নেন। ১৭ বল খেলে মাত্র ৭ রান করেন উইলিয়ামস। এতে ২২ রানের মধ্যেই তিনটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

এরপর ক্রেগ আরভিন ও বেন কারান মিলে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও ৩০তম ওভারে আবার ধাক্কা দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওভারের প্রথম বলেই আরভিনকে বোল্ড করেন তিনি। আর শেষ বলে ফিরিয়ে দেন ওয়েসলি মাদেভারেকে। ফলে একই ওভারে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন মিরাজ।

নিজের পরের ওভারে ফিরে আবারো সাফল্য এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এবার তাফাদা সিগাকে ক্যাচ তুলতে বাধ্য করেন, যেটি সহজেই তালুবন্দি করেন এনামুল হক বিজয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন মিরাজ। এরপর ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও বেন কারানকে ফিরিয়ে ইনিংসে তুলে নেন পাঁচ উইকেট—ফাইফার পূর্ণ করেন তিনি।

এই পারফরম্যান্সের মাধ্যমে মিরাজ হয়ে ওঠেন তৃতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার, যিনি একই টেস্টে সেঞ্চুরি এবং পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন।

ইনিংসের শেষদিকে আবারও বল হাতে ফেরেন তাইজুল ইসলাম। তিনি জিম্বাবুয়ের লোয়ার অর্ডার ধসিয়ে দেন। ৪৩তম ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন রিচার্ড এনগারাভাকে। শেষ ব্যাটার মাসাকেসা রান আউট হলে ১১১ রানেই শেষ হয়ে যায় জিম্বাবুয়ের ইনিংস।

ম্যাচে সর্বোচ্চ ৯ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। মেহেদি হাসান মিরাজ পেয়েছেন ৫ উইকেট, আর নাঈম হাসান শিকার করেছেন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:জিম্বাবুয়ে: ২২৭ ও ১১১বাংলাদেশ (১ম ইনিংস): ৪৪৪ফল: বাংলাদেশ জয়ী ইনিংস ও ১০৬ রানে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

খেলাধুলা এর সর্বশেষ খবর

খেলাধুলা - এর সব খবর



রে